ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫ , ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

সোহরাওয়ার্দীতে ‘ইতিহাস’ লিখলো জামায়াত

আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ১২:৩৯:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ১২:৩৯:১৯ অপরাহ্ন
সোহরাওয়ার্দীতে ‘ইতিহাস’ লিখলো জামায়াত
দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এখানে দেশের প্রায় সব বড় রাজনৈতিক দলই সময় সময় সমাবেশ করেছে। তবে এককভাবে জামায়াতে ইসলামীর কখনো সমাবেশ করার ইতিহাস ছিল না।

অবশেষে সেই শূন্যতা পূরণ করল দলটি—প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একক জাতীয় সমাবেশ করছে জামায়াত।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ‘জাতীয় সমাবেশ’। দলটির ঘোষিত সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত এ সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত। নেতাকর্মীদের দাবি, স্মরণকালের অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম ঘটবে এ আয়োজনে।

দলের লক্ষ্য, এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজনীতির মাঠে নিজেদের সক্রিয় ও শক্তিশালী উপস্থিতি জানান দেওয়া। সমাবেশে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা তুলে ধরবেন। মূল মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জুলাইয়ের শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি এবং আমন্ত্রিত রাজনৈতিক দলের নেতারা।

সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢল নামে নেতাকর্মীদের। সকাল ১০টার মধ্যেই উদ্যানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় আশপাশের সড়ক ও ফুটপাতেও অবস্থান নিতে থাকেন অংশগ্রহণকারীরা।

দলীয় সূত্র জানায়, সমাবেশ সফল করতে ঢাকাসহ দেশজুড়ে ব্যাপক গণসংযোগ, প্রস্তুতিসভা, মিছিল-সমাবেশ ও সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো নেতাকর্মী রাজধানীতে পৌঁছাতে কয়েক হাজার বাস, ট্রেন ও লঞ্চ রিজার্ভ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে পল্টন, বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করলেও সোহরাওয়ার্দীতে একক সমাবেশের সুযোগ আগে পায়নি জামায়াত। দলটির নেতারা মনে করছেন, সরকারের রাজনৈতিক আচরণে পরিবর্তনের পর এক ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যার প্রেক্ষিতে তারা নতুন করে মাঠে সক্রিয় হচ্ছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলের সাত দফা দাবি তুলে ধরাই এ সমাবেশের মূল লক্ষ্য। দাবিগুলো হলো—
১. সব গণহত্যার বিচার
২. প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার
৩. জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন
৪. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন
৫. সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন
৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা
৭. নির্বাচনের আগে সমতাভিত্তিক রাজনৈতিক পরিবেশ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করা।

সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। তিনি জানান, সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের জন্য খাবার ও অজুর পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। থাকবে ১৫টি মেডিকেল বুথ, যেখানে ৫০-৬০ হাজার পানির বোতল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া ৩৩টি এলইডি স্ক্রিন, ৩০০ মাইক, পর্যাপ্ত লাইটিং ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিশ্চিতে কাজ করছে ৮টি উপকমিটি এবং দায়িত্ব পালন করছেন ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে বলে জানান দলটির নেতারা।

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ